একুশে নিউজ ডেস্ক :সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিল কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা বাধা ডিঙিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনকে আটক করেছে। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি মিঠু দাস জয়।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পার্শ্ববর্তী আখালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকেল সোয়া ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ফাঁকা গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ছে। জবাবে শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে।
জানা গেছে, বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গেট থেকে গণমিছিল নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে মদিনা মার্কেটের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে আসলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
একজন শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেন, সাড়ে ৩টার দিকে মিছিলে এসে জড়ো হয়েছিলাম। মিছিল শুরু হওয়ার পর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দুই দিক থেকে পুলিশের আক্রমণের মধ্যে পড়ি। পরে আন্দোলনকারী সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের একটি বাসার মধ্যে নিয়ে অবস্থান করান। অন্তত দেড় ঘণ্টা ধরে এখানেই আছি।
তিনি বলেন, নিজের জায়গা থেকে সেইফ মনে হচ্ছে, তবে বাইরে এখনো যারা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কথা ভেবে কষ্ট লাগছে। দেখতেও পাচ্ছি না বুঝতেও পারছি না তারা কেমন আছেন? কেন এত সব?
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে তো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। এখানে পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাব যেভাবে নির্বিচারে গুলি করতেছে, মনে হচ্ছে যে দেশের যুদ্ধ লেগে গেছে। এটা কোনো প্রয়োজন ছিল না। ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এরা পরিকল্পিত আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইতিমধ্যে প্রথম সারি গণমাধ্যমগুলোতে আমরা জেনেছি ১০ জন আটক হয়েছেন।
আন্দোলনে যোগ দেওয়া একজন শিক্ষিকা বলেন, আমি একজন সাবেক সাস্টিয়ান, এর চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক। এই আন্দোলনে প্রথম থেকে আছি এবং থাকব, কারণ এটা একটা ন্যায্য দাবি। সবার উচিত ছাত্রদের পাশে থাকা। তাছাড়া সরকার যেভাবে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্রদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে একের পর এক হামলা করছে, তাতে করে নিজেদের ধরে রাখা দায়।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখ গণমাধ্যমকে বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে। আমাদের অন্তত ৫-৬ জন পুলিশ আহত হয়েছে। নাক ফেটে রক্ত পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শটগানের গুলি, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে। আমরা ৮ জনকে আটক করে থানায় পাঠিয়েছি। এখনো সংঘর্ষ চলছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ গালিব গণমাধ্যমকে বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। পাড়া-মহল্লায় ঢুকে গুলি কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। অন্তত ২ শতাধিক আহত হয়েছেন।