• ১৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কোটি টাকা প্রতারণা, সুনামগঞ্জের কথিত পীর গ্রেপ্তার

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
কোটি টাকা প্রতারণা, সুনামগঞ্জের কথিত পীর গ্রেপ্তার

একুশেনিউজ ডেস্ক::
ঢাকার ভাটারায় আস্তানা গেড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মজলিশ বসিয়ে বহু মুরিদ তৈরি করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন একটি প্রতারক চক্র। পদ নিয়েছেন আওয়ামী নির্মাণ শ্রমিক লীগে।

ওই পদ ব্যবহার করে সচিবালয়ে ঢুকে মন্ত্রী-সচিবদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। সেগুলো দেখিয়ে লোকজনকে চাকরি দেওয়াসহ নানা প্রলোভনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রতারণার বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়ে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে আবদুল মুত্তালিব চিশতি নামের কথিত এই পীরকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

আবদুল মুত্তালিব চিশতির গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশায়। তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করে এমন প্রতারণার অভিনব ফাঁদ তৈরি মানুষজের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

ডিবির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, কথিত পীর মুত্তালিবের বিরুদ্ধে এর আগেও ঢাকার খিলগাঁও ও ভাটারা থানায় প্রতারণা মামলা হয়েছে। তিনি নরসিংদীর রায়পুরার ছয় ব্যক্তিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া নেত্রকোনার একটি ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ‘নৌকা’ প্রতীক পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিভিন্নজনের কাছ থেকে নানাভাবে প্রতারণা করে তিনি কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আট বছর ধরে তিনি এই কাজ করেছেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮ বছর বয়সী মুত্তালিবের পড়াশোনা সামান্য। তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধরমপাশায়। পীর সেজে তিনি বয়ান করতেন, পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সফর করতেন। সেখানে বয়ান শুনে অনেকেই তাঁর মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে পরে যোগাযোগ করতেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি প্রতারণা শুরু করেন।

মশিউর রহমান জানান, মুত্তালিব আওয়ামী নির্মাণ শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি। এই পদ ব্যবহার করে তিনি আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সুপারিশ নিয়ে সচিবালয়ে ঢুকতেন। বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আনাগোনা ছিল তাঁর। এসব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। পরে তাঁর চক্রের সদস্যরা এসব ছবি দেখিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতেন।

তারপর নানা কায়দায় তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। কম মূল্যে রাজউকের প্লট দেওয়া এবং সিটি করপোরেশন, পৌরসভা-ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে মেয়র, চেয়ারম্যান ও সদস্যপদে ‘নৌকা’ প্রতীক পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতেন তিনি।

ভাটারা থানায় এক প্রতারণা মামলায় মুত্তালিবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে ছয় দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত তাঁর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।